সোমবার, ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০১৯

পায়ে-পায়ে পিন্ডারী-কাফনী


pindari-kafni trek


  ২৩,অক্টোবর,২০১০,উপাসনা এক্সপ্রেসে চেপে বসলাম স্ত্রী-পুত্র কে নিয়ে, আপাতত গন্তব্য লক্ষ্ণৌ। পরদিন সকাল  বেলা লক্ষ্ণৌ পৌঁছে বোঁচকা-বুঁচকি হোটেলে  নামিয়ে,সামান্য জলযোগ,এবং তারপর পথে নামা। বড়া-ইমামবাড়া,ছোটা-ইমামবাড়া,চিড়িয়াখানা। 
বড়া-ইমামবাড়া

অতঃপর দিবানিদ্রা।  রাত্রি ৮-৩০ এ  আয়েষবাগ ষ্টেশন থেকে  ট্রেন। এবার গন্তব্য লালকূঁয়া। কূয়াসা মোড়া ছোট্ট ষ্টেশন লালকূঁয়া।  ট্রেনের শব্দে মুখরি‌ত সময় সকাল ৬-৩০।  ষ্টেশনের বাইরে থেকে গাড়ী।  হালদোয়ানী-কাঠগোদাম টপকে সবুজ পাহাড়ের বুক চেরা রাস্তা,ছোট জনপদ,দিগন্ত বিস্তৃত আলো-ছায়া পাহাড়ের তরঙ্গ,ফুরফুরে হিমেল বাতাস আর নীলাভ-সবুজ বর্ণছটা।প্রায় বেলা ২-৩০ নাগাদ বাগেশ্বর। মনের ইচ্ছে যদি প্রবল হয় তাহলে আপনি তা পাবেনই-এ কথা হলফ করে বলতে  পারি এখন,কেন-তবে বিস্তারিত বলি। যাবার কথা ছিল গোমুখ-তপোবন,কিন্তু উত্তরাখণ্ডে প্লাবনের ভয়ংকর রূপ দেখে শুভাকাক্ষীরা ছাড়তে নারাজ। অথচ আমাদের হরিদ্বারের টিকিট ছাপা হয়ে গিয়েছে হিমালয়ের প্রবল হাতছানি-কি করি! কিংকতর্ব্যবিমূঢ় অবস্থায় বন্ধু তাপসের কথায় বদল হল রাস্তা।  গোমতী আর সরযু নদীর সঙ্গমে                              বাগেশ্বর উচ্চতা ৩১৯৮ফুট। কেদারনাথ মন্দিরের আদলে বাঘনাথবাগেশ্বর উচ্চতা ৩১৯৮ফুট                        
uttrakhand river
  কেদারনাথ মন্দিরের আদলে বাঘনাথ মন্দির,যা ঘিরে জনপদ। বর্তমান উত্তরাখণ্ডের একটি জেলাও এটি।   
   কথিত,এক প্রস্থরখন্ডের ওপর মার্কণ্ডেয় মুনি ধ্যনস্থ।এদিকে গঙ্গা মা যে এই পথে নেমে আসবেন-কি করা যায়? মুনি কে সরাতে হবে এখান থেকে। অবশেষে দেবাদিদেব মহাদেবের লীলায় সৃষ্টি হল এক বাঘ,আর সেই বাঘ এর উৎপাতে ঋষির ভঙ্গ হল ধ্যান।কিন্তু, এতো যে সে ঋষি নয়। ঋষি সৃষ্টির মধ্যে পেলেন স্রষ্টার সন্ধানবাঘ,এর মধ্যেই দর্শন করলেন মহাদেব কে। আর তীর্থ ভূমি পরিচিত হল বাঘেশ্বর অপভ্রংশে বাগেশ্বর। ১৫৫৭ সালে মহারাজা লক্ষীচন্দ্র ২৪ বছর রাজত্ব কালে বহু নতুন মন্দির এবং পুরানো মন্দিরকে নতুন করে নির্মান করেন। দুপুরের খাওয়া সাঙ্গ  করে,নিজেদের সর্মাপন করলাম,আমাদের পথ-প্রদর্শক,খিলাপের হাতে  এরপর গাড়ী ধরে ২৫ কিমি দূরে ভারারী,   
ভারারী থেকে সঙ্‌ বা সোয়াং,গাড়ী অবশ্য ৩কিমি দূরে লোহারখেত পর্যন্ত যায়। কিন্তু এবার তা হবার নয় প্রকৃতির রোষে রাস্তা লোপাট। অগত্যা হাঁটা। ছুঁই-ছুঁই সন্ধ্যায় পৌঁছালাম লোহারখেতে(৫৫০২ফুট)  
trek route pindari-kafni glacier
   সকাল বেলা  লোহারখেতকে বিদায় জানিয়ে প্রায় ১২কিমি দূরে ঢাকুরী উদ্দেশে যাত্রামাথার উপর ঝকঝকে নীল আকাশ,একপাশে গভীর খাদ তবে রাস্তা বেশ চওড়া।চড়াই আর চড়াই,উতরাই খুব কম। পাথুরে রাস্তা কোথাও সঙ্কীর্ণ। রাস্তার দু-পাশে নবীন ও প্রাচীন গাছগাছালির আলো-ছায়া পথে রূপের খেলা। সঙ্গে হিমেল বাতাস,পাখির কলতানখানিক জিরানো আবার হাঁটা।
একটা আস্ত বুগিয়াল পেরিয়ে প্রায় বেলা ৪-৩০ মিঃ নাগাদ ঢাকুরি টপ(৮৮১৭ফুট)। বাঁ দিকে সরু রাস্তা গিয়েছে চিল্টা মা এর মন্দির আর সোজা রাস্তা নেমে গিয়েছে ঢাকুরি। আকাশ পরিষ্কার থাকলে কুমায়ুনের বিখ্যাত সব চূড়া দেখা যায় ঢাকুরি টপ থেকে। ক্লান্ত,বেসামাল পা,সামনে ভয়ংকর উতরাই। 
লাঠিকে ভরসা করে নেমে এলাম ঢাকুরির সমতলে। আজকের মতো পথচলার ইতি। পূর্ত বিভাগের বিশ্রামাগারে রাত্রি-যাপন। খানিক নীচে কুমায়ুন মণ্ডলের বাংলো।    
trek route pindari-kafni glacier
 ইতস্তত তিন-চারটে টেন্ট,একপাশে ছোট চা এর দোকান। অমাবস্যার নিকষ কালো অন্ধকার ছাওয়া আকাশ জুড়ে উজ্জ্বল রাতজাগা তারা। ঝিঁ-ঝিঁ পোকার বিরামহীন ডাক। কখনো কখনো, দূর থেকে ভেসে আসে রাতচরা পাখীর তীব্র তীক্ষ আওয়াজ। সামনের ঘনীভূত অন্ধকার ঠেলে চোখে ভেসে ওঠে পুজ্ঞিত হিমের শিখর। অপার্থিব সে দৃশ্য।
  ঘুমভাঙানীয়া খিলাপের ডাকে উঠে পথ-চলার প্রস্তুতি। গন্তব্য ৯ কিমি দূরে   
trek route pindari-kafni glacier
ঘনীভূত অন্ধকার ঠেলে চোখে ভেসে ওঠে পুজ্ঞিত হিমের শিখ
খাতি(৭৩৫৫ফুট)। বেশ আরাম দায়ক উতরাই। পাইন-ওক-রোডডেনড্রন আর নাম না জানা গাছ-গাছালির সবুজ সংসারে মায়াবী আলো-ছায়া বিছানো, আঁকা বাঁকা, এবড়ো-খেবড়ো পাথুরে রাস্তা ধরে তরতর করে এগিয়ে চলা। কিন্তু কথায় বলে আরাম হারম হ্যায়। এবার চড়াই, প্রানবায়ু বেড়িয়ে যাবার যোগাড়,ধপ করে কিছুক্ষন বসা বিশ্রাম-আবার চলা।
trek route pindari-kafni glacier
 পথচলা মানুষ,স্কুল-পড়ুয়া,শিশু-কিশোরদের নমস্তে-নমস্তে ধ্বনিতে সাড়া দিতে দিতে এগিয়ে যাওয়া,এ যেন সেই প্রাচীন আবরন মুক্ত ভারত। বেশ খানিক রাস্তা পেড়িয়ে একটা গ্রাম,বাড়ীর সামনের অংশে  থাকবার ও খাবার দোকান,মুলত ট্রেকাররাই খদ্দের। একটা দোকান বসে চা ও ম্যাগী খেতে খেতে তাদের সঙ্গে আড্ডা।ইতিমধ্যে আকাশ জোড়া কালো মেঘে বৃষ্টি এল। কনকনে ঠান্ডা হাওয়ায় আমাদের জবুথবু অবস্থা দেখে দোকানের মালকিন এগিয়ে দিল কম্বল। আর এক প্রস্থ চা খেতে খেতে রোদ উঠল। সামনের পাহাড়ে তখন রামধনুর বর্ণছটা খিলাপের তাড়াতে পথে নামলাম।
trek route pindari-kafni glacier
কাঠের সাঁকো পেরিয়ে প্রবেশ করলাম খাতি গ্রামে। খাতি এপথের শেষ গ্রাম। মোবাইল আর কাজ করবে না এরপর। এখান থেকে একটা রাস্তা গিয়েছে সুন্দরডুঙা ভ্যালী আর সোজা রাস্তা গিয়েছে পিন্ডারী-কাফনী গ্লেসিয়ার। আপাতত আজ আমাদের আস্তানা তারা সিং এর সঙ্গম কটেজ। পাহাড়ের গায়ে পাথুরে বাড়ী আর ধাপ চাষের মধ্যে প্রবাহিত পাহাড়ের 
sangam cottage at khati village
তারা সিং এর সঙ্গম কটেজ
 সারল্য মাখা অনাবিল জীবনের স্রোত। গ্রামের কালী মন্দির থেকে ভেসে আসছে ঘণ্টাধ্বনি। সামনের রাস্তায় মাঝে মাঝে উৎসবের সাজে পাহাড়িয়া মানুষ শিঙা-ঢোল বাজাতে বাজাতে চলেছে। আমার মন পড়ে নিয়ে,তারা সিং হেসে বললো,মন্দিরে রাতে কালী পূজো,তাই আশপাশের গ্রামের সব মানুষ খাতিতে উৎসবে সামিল হবে। আজ মহা সপ্তমী,বাংলার রাস্তাও মুখরিত।ইতিমধ্যে কোথা থেকে এক জলভরা মেঘ জমাট বাঁধছে সামনের পাহাড়ের চূড়ায়। ছেঁড়া ছেঁড়া ধূসর-সাদা মেঘ ও রোদের খেলায় অপার্থিব মায়া ছড়িয়ে পড়েছে পাহাড়ের গায়ে। টিপ-টিপ বৃষ্টি শুরু হতে সে মায়ার বাঁধন কাটিয়ে ঘরমুখো হলাম। দুপুরের খাওয়া সাঙ্গ করে ঘুম। বিকেলে মন্দিরে চত্বরে ভিড় দেখে ফিরেএকটা উচুঁ পাথরে বসে আকাশ দেখছি। গাঢ় নীলআকাশে শরতের ছেঁড়া-ছেঁড়া সাদা মেঘে নিভন্ত সূর্যের  

khati village
  রঙের খেলা। আলো ডুবে যেতে  ঠান্ডার তীব্রতা,গ্রামের ঘরে ঘরে সৌর বাতির টিমটিম আলো,মন্দির চত্বর থেকে ভেসে আসা ঘন্টা-ঢোল আর মানুষের কোলাহলে এক সাথীহারা তারা জ্বল্ জ্বল্ করে আকাশে কাঁপছে। তিন দিকের মাথা উঁচু করা পাহাড়েরা এই কুচকুচে অন্ধকারে ঘুমতে গিয়েছে বোধহয়। শীতের প্রকোপ তীব্র হতে মন্থর পায়ে ফিরে এলাম আস্তানাতে। 
  বন-চোঁয়া ভোরের আলোয় চার প্রাণীর এগিয়ে চলা। বিশ্বচরাচরে কোন এক অজানা শব্দের খোঁজে প্রত্যেকে তার নিজস্ব কায়দায় শব্দের সেতু তৈরী করে প্রকৃতির আরো গভীরে পৌঁছতে চাইছে। কখনো কখনো এক শব্দ নিভে গিয়ে তৈরী হচ্ছে নতুন শব্দ। অর্নিবচনীয় সেই শব্দ-শৃঙ্খলের মধ্যে দিয়ে হাঁটা। হিমেল বাতাসে অনাগরিক সুবাস। পায়ের নীচে নন্দাদেবী অভয়ারণ্যের শুকনো,নরম,বাদামী,হলুদ পাতার গালিচা। গাছের গভীর পাতার আড়ালে লুকিয়ে থাকা পাখীদের কল-কাকলি আর অনেক নীচ দিয়ে বয়ে যাওয়া পিন্ডার গঙ্গার উচ্ছাস,শরীরের গভীরে থাকা মনকে গৃহত্যাগী করে তোলে।পথ  চলার সেভাবে কষ্ট নেই। শুধু যেখানে  যেখানে ধস নেমেছে সচ্ছন্দ গতি নষ্ট হছে।  
trek rout pindari-kafni
প্রকৃতির গভীরে 
 পিন্ডার গঙ্গার কলকল উচ্ছাস এখন তীব্র শৈলভেদী মহারব। জায়গার নাম মালিয়াধার। নদীর দুই তীরে  সবুজ পাহাড়। পাহাড়ের গা দিয়ে সরু রাস্তা মিলেছে কাঠের সেতুতে। এই সেতু দিয়ে আমাদের নদীর ও পারে যেতে হবে,তবে,এখন এই ছবির রাজ্য ছেড়ে কেউ যাব না। মুল রাস্তা ছেড়ে বাঁদিকের রাস্তা ধরে সকলে নদীর পাশে নেমে এলাম। ছোট-বড় নানা রঙের পাথর ছড়ানো। মাঝে মাঝে প্রমান মাপের পাথরের পাস কাটিয়ে স্ফটিক-স্বচ্ছ নীলাভ জলরাশি,রোদের আলোয়, চিক চিক করতে করতে দামাল শিশুর নির্ভিক  উচ্ছাস-উথলে এগিয়ে চলে।        
pindar river
 নির্ভিক উচ্ছাস-উথলে এগিয়ে চলে পিন্ডার গঙ্গা      
 বড় একটা বোল্ডারে হেলান দিয়ে বসে পড়লাম। গাছের ফাঁক-ফোকর দিয়ে কাটা রোদ গায়ে এসে লাগছে। নদীর বুক ছুঁয়ে আসা সুশীতল বাতাস শ্রান্ত দেহতে স্নিগ্ধ প্রলেপ আঁকে। আলস্যের কুয়াশাতে আমার সকল উদ্যম আচ্ছন্ন। খিলাপ,লোহার সাঁকোর পাশের দোকান থেকে একঘটি জল আর চা নিয়ে এল। পথের আহ্বানে সজাগ হল মন। এগিয়ে চললাম।কিছুটা বনের পথে,কিছুটা উত্তপ্ত নীল আকাশের নীচ দিয়ে,ডান পাশে,ফেলা-ভাঙা-চপলতায় উচ্ছ্বসিত পিন্ডার নদী আমাদের বিপরীতে ছুটছে। নদীর ওপার থেকে ধীরে ধীরে উঠে গিয়েছে আকাশ ছোঁয়া সবুজ পাহাড়। পাহাড়ের গায়ে সাদা ধব ধবে ঝর্ণার ধারা। দু-একটা ছোট চড়াই ছাড়া রাস্তা সেরকম কষ্টদায়ক নয়। খিলাপ বলল আমরা আর ২কিমি হাঁটলেই পৌঁছে যাব দুয়ালী(৮৫৬৬ফুট) বা দোয়ালী। হিসাব অনুযায়ী আমরা ৯কিমি রাস্তা হেঁটে ফেলেছি। ক্রমশ রাস্তা সর্ঙ্কীর্ণ হচ্ছে। পাহাড়ের গা ঘেঁষে চলা। ডানদিকের নদীও কাছে চলে এসেছে। নদীর ভীষণ বেগের শব্দে কানে তালা লাগার জোগাড়।  
  দুপুর ২-৩০ নাগাদ পৌঁছলাম দুয়ালী। কাফনী নালা আর পিন্ডার নদীর মিলনক্ষেত্র এই দুয়ালী। নদীর ওপর কাঠের সাঁকো পেড়িয়ে,অল্প চড়াই ভেঙে পৌঁছলাম আজকের আস্তানা কুমায়ুন মণ্ডলের বাংলোতে।
  বিকেলে বাংলোর চারপাশে পায়চারী। চারিদিকে সবুজ পাহাড়ের তরঙ্গ,আশপাশের গাছগুলো অনেক ছোট, গুল্ম জাতীয়। উচ্চতা বৃদ্ধির সঙ্গে মানুষের জীবন বৈচিত্রের যেমন বদল ঘটে প্রকৃতির বৈচিত্রেও সেই বদলও বিদ্যমান।
নদীর একঘেয়ে বয়ে চলার শব্দ ছাড়া চারিদিক অচঞ্চল-নীরব-নিস্পন্দ। দ্রুত স্তিমিত সূর্য আকাশে লালিমা  ছড়িয়ে নদীর ওপারের পাহাড়ের পিছনে নেমে যায়। অন্ধকার ভারী হয়ে ওঠে। নিকষ কালোতে দৃশ্যমান পাহাড় হয়ে ওঠে প্রাচীন দৈত্যের মত। স্বচ্ছ আকাশ ছেয়ে অসংখ্য তারার চিক-মিক। রান্নাঘরে কাঠের আঁচে রাতের খাবার তৈরী হচ্ছে সঙ্গে বাংলোর কর্মচারীদের আড্ডা। গুটিগুটি পায়ে এগিয়ে যোগ দিলাম  আড্ডাতে,শুনলাম তাদের সুখ-দুঃখের অভিজ্ঞতা,ভুত প্রেতের গল্প আর জন্তু-জানোয়ার,বিশেষতঃ ভাল্লুকের আক্রমণ ও তা থেকে বাঁচার ইতিবৃত্ত।     
trek rout pindari-kafni
  আজ যাব ফুরকিয়া(১০৪৬৫ফুট)। ৭কিমি রাস্তা। খুব সকাল সকাল বেরিয়েছি সবাই। পথ ভীষন চড়াই। সকালের হিম-তীক্ষ প্রবল বাতাস আছড়ে পড়ছে চোখ- মুখের ওপর। অবসন্ন,ক্লান্ত পা কোনরকমে টেনে নিয়ে যাচ্ছে আমাকে। মাঝে মাঝে দাড়াচ্ছি,গামছায় ঠান্ডা ঘাম মুছে,জল খেয়ে আবার হাঁটছি। উজ্বল ইস্পাত নীল আকাশ। চারিদিক শুকনো বিবর্ণ সবুজ। নিঃসীম নীরবতায় ভরাট এই অঞ্চলে নিজের পায়ের শব্দে নিজেকেই চমকে উঠতে হয়। খাড়া উঁচু চড়াই দেখে বড় একটা পাথরের গায়ে হেলান  দিয়ে,সঙ্গীদের এগিয়ে যেতে বলে,বসে পড়লাম। এ যেন ভাষাহীন-বৈচিত্রহীন-নীরব-নিশ্চল এক অরন্য। দীর্ঘক্ষন বসে থাকার জন্য শরীর ঠাণ্ডা হয়ে আসছে,স্যাক থেকে উইন্ড-চিটার বার করে পড়ে নিলাম। গত রাতে শোনা ভাল্লুকের গল্পটা মনে পড়তে একদমে টানা চড়াই ভেঙে উঠে পড়লাম। কিন্তু নীচ থেকে যা দেখেছি,ওখান পৌঁছে দেখি,আর একটা খাড়া চড়াই উঠতে হবে আমায়। মনের ভিতর ভয়টা ভয়ঙ্কর জমাট। বুক অজানা ভয়ে কাঁপছে-কি কুক্ষনে যে আমি  সবাই কে চলে যেতে বললাম!এখন যদি রাস্তা হারাই! হাঁটার বেগে কামারশালার হাঁপড়ের মত শ্বাসের আওয়াজ। দাদা ইধার,খিলাপের গলা। নিজের অসহায়তা লুকিয়ে উত্তর দিলাম,হ্যাঁ যাচ্ছি’।' সাড়ে তিন কিমি যানেসে ফুরকিয়া,আভি থোড়া রেষ্ট কিযিয়ে,দাদা। পকেট থেকে চকোলেট বার করে সবাইকে  দিলাম
  পথ এখন অনেক সরল। সে ভাবে চড়াই-উতড়াই নেই,হাল্কা চালে গল্প-গুজব করতে করতে হাঁটা। বেলা দেড়টা-দুটো নাগাদ পৌঁছে গেলাম ফুরকিয়ায় কুমায়ুন মণ্ডলের বাংলোতে। হাত বাড়ালেই সাদা পাহাড়। ঘরে বোঁচকা-বুঁচকি নামিয়ে,বাইরে চেয়ারে বসে সূর্যের গরম ওম নিতে নিতে তাকিয়ে থাকি উদ্ধত হিম-শিখরের দিকে। মাথার ওপর রোদে পোড়া নীল আকাশ,সামনে গগনর্স্পশী হিমগিরির ওপার থেকে ভাষাহীন-শব্দহীন এক অসীম নির্জনতার আশ্বাস ভরা হাতছানি। অন্তহীন আনন্দ ও নিবিড় শান্তিতে শিশুর মত ছল-ছল করে ওঠে চোখ। খাবার ডাক আসে। আনমনে এগিয়ে চলি রান্নাঘরের দিকে। গরম ভাতের গন্ধে চনচনে খিদের অনুভুতি। আলুসিদ্ধ-ডাল-ডিমসিদ্ধ আর ঘি সহযোগে গরম ভাতএ যেন অমৃতের আস্বাদ। খাওয়া শেষ করে চেয়ারে এসে বসলাম আবার। চারিদিকের পরিবেশের প্রভাবে মন শান্ত-নিস্তরঙ্গ-উচ্ছ্বাসহীন  চরাচর যখন হাল্কা নীলাভ,গুটি গুটি পায়ে,শীতে কাঁপতে কাঁপতে,ভোরের আলোর খোঁজে
mighty Himalaya peak at pindai glacier
 ক্যামেরা হাতে এগিয়ে যাচ্ছি। অপ্রস্তুত কোন পাখী সোনালী ঘাসের ঝোপ থেকে ডানার ঝাপটা দিয়ে জানান দিল আমি একা নই। সে ও এই তরল অন্ধকার কখন ঝরে পড়বে তার জন্য অপেক্ষারত। হিমশিখরে আবছা লাল,ক্রমশ ঘন লাল-কমলা-সোনালীর রঙের নৃত্য। এই মোহময়ী রূপের বর্ণনা দিতে অক্ষম আমি খন্ডিত মূহুর্তকে বন্দী করলাম ক্যামেরাতে।যদিও বাড়ি ফিরে হাতকাঁপা ছবিগুলো দেখে নিজের প্রতি করুণা হয়েছিল।  বাংলোতে ফিরে বেরিয়ে পড়লাম
৫ কিমি দূরে পিন্ডার গঙ্গা উৎসের সন্ধানে। বুগিয়ালের ওপর দিয়ে কুয়াশার  চাদর সরিয়ে পায়ে পায়ে এগিয়ে চলা।
mighty Himalaya peak at pindai glacier
মেঘমুক্ত নরম নীল আকাশের ওপর রুপোর পাতের মত চকচকে শৃঙ্গ-বালজৌরী,ছাঙ্গুস,পাওলীধর নন্দাখাট,নন্দাকোট। আর আছে-ট্রেলস পাস,পিন্ডারী হিমবাহ। নীচে তির তির করে বয়ে চলেছে নবজাতক পিন্ডার গঙ্গা। প্রকান্ড এক নীলাভ ছাতার নীচে স্থির-দীপ্ত-শ্বেত-শুভ্র-আবরণমুক্ত হিমালয়ের রূপে আবিষ্ট আমি আনন্দের স্রোতে স্নাত। মুক্তির আনন্দে দিশেহারা শিশুর মত মুছে যায় সময়ের হিসাব। 
mighty Himalaya pindai-kafni route
নবজাতক পিন্ডার গঙ্গা
  খিলাপের ডাকে সম্বিত আসতে দেখি মাথার ওপর মধ্যাহ্ণের সূর্য। খিলাপ কোথা থেকে ধুপ ও ছো্ট ছোট পাহাড়ী ফুল  নিয়ে এসেছে। দাদা পূজা কর লিজিয়ে ফুল-ধুপ দিয়ে পূজা সেরে এবার ফেরার পালা। দাদা ইধার,বাবাজীকো থোড়া দর্শন কিজিয়ে ওর কথামত উপস্থিত হলাম স্বামী ধর্মানন্দ গিরি মহারাজের ডেরায় স্বামীজিকে প্রনাম করলাম,উনি  বসতে আদেশ করলেন। পাহাড়ের দিকে মুখ করে প্রাচীরের গায়ে হেলান দিয়ে বসে,খিলাপ পরবর্তী পরিকল্পনা শোনাতে লাগল,এর মধ্যে স্বামীজি লুচি-রাজমার ডাল আর চা  নিয়ে উপস্থিত।    উড়িষ্যার  মানুষ স্বামীজি- বাংলা,হিন্দী,ইংরাজী,  মালয়ালাম,সংষ্কৃত জানেন। নিজের আধাত্মিক সাধনার সাথে সাথে পাহাড়ের গ্রামে গ্রামে বাচ্চাদের
pindari glacier
   
temple in front of pindari glacier
স্বামী ধর্মানন্দ গিরি মহারাজের ডেরা
পড়াশোনাতে সাহায্য করেন।  আপনার ভয় কোরে না,এই নির্জন-প্রতিবেশীহীন প্রান্তরে একা থাকতে?আমার প্রশ্নে,মৃদু হাসলেন -মানুষতো নিজেই নিজের প্রতিবেশী বাবা মনে পড়ল উত্তরকাশীর এক সাধু এই রকম এক প্রশ্নের উত্তরে উদাত্ত কণ্ঠে গেয়ে উঠেছিলেন--
মরণ আঁধার কোলে,জীবন আলোকে জ্বলে
 শংকর শিব সাজে সাজিয়া দয়াল। 
 মাভৈঃ! মাভৈঃ! মাভৈঃ! মাভৈঃ!
  এবার ফেরার পালা,ফুরকিয়াতে মধ্যাহ্ন ভোজন করে বেরিয়ে পড়া দুয়ালীর উদ্দেশে। একই পথ শুধু উৎরাইয়ে দ্রুত নেমে যাওয়া কোনো দিকে তাকানোর ফুসরত নেই। দিনের আলো থাকতে থাকতে পৌঁছতে হবে গন্তব্যে।
  মেঘলা আকাশ,কম্বল ছেড়ে বেরোলেই তীরের মত বিঁধছে ঠান্ডা। ঘড়িতে তখন সকাল নটা,যেতে হবে খাটিয়া,দূরত্ব ৭ কিমি। খিলাপ জানাল,ডাল-ভাত খেয়ে ১২ টা নাগাদ বেরনো হবে। হাতে এখন অনেক  সময়। কম্বল মুড়ি দিয়ে গেলাম সোজা রান্নাঘরে উনুনের পাশে। কাঠের জ্বালে হাঁড়িতে চা ফুটছে। গরম গরম চা খেয়ে বাইরে চেয়ারে এসে বসি। বাংলোর পিছনে মেষপালকদের একটা দল আশ্রয় নিয়েছে,তাদের কুকুরের চীৎকার নদীর গর্জন ছাড়া চারিদিক নিস্তব্ধ-নিঝুমএমন কি পাহাড়-গুলো ঘুমে অসাড়। স্নানের জন্য গরম জল দিয়ে গেল,অগত্যা ধড়াচূড়া ফেলে স্নানাগারে।
  খাওয়া-দাওয়া পর্ব শেষ হতে আমাদের আশ্চর্য করে সূর্যদেব মিট মিট করে চোখ খুললেন। জেগে উঠল পাহাড়,আলোর বন্যায় চিক চিক করছে চারদিক। আমরা দুয়ালীকে বিদায় জানিয়ে কাফনী নালার পাশ দিয়ে হাঁটা শুরু করলাম। পিন্ডারীর রাস্তার থেকে এ রাস্তা একটু বিপদজনক। একপাশে গভীর খাদ। নীচ দিয়ে বয়ে চলা খরস্রোতা কাফনী নালা। তবে বাঁকে বাঁকে অপার সৌন্দর্য। ঝরা পাতার নানা রঙে চিত্রিত কার্পেট বিছানো পথ।  
river kafni
 দু-তিনটে ছোট ধস পেরোনো ছাড়া সে ভাবে কোন অসুবিধা নেই। পাহাড়ের সর্পিল পথের পাথরের ফাঁকে ফাঁকে হলুদ-বেগুনী-সাদা ছোট ছোট ফুটে থাকা বনজ ফুল। খিলাপ,ভূর্জপত্রের গাছ থেকে পাতলা-কাগজের মত বাকল,সজারুর পড়ে থাকা কাঁটা হাতে তুলে দিল। পিণ্ডারির থেকে এ রাস্তা অনেক বন্য। ধীর গতিতে লাঠির সাহায্যে উতরাই নামচি, যাতে শুকনো পাতায় পা না হড়কায়। গভীর উতরাই ভেঙে যেখানে এসে পৌঁছালাম,সেখান থেকে চড়াই এ উঠতে হবে। পথের কোন নিশানা নেই। পড়ে আছে পথের  ধবংশাবসেস। বিভিন্ন আকারের বোল্ডার। মোটামুটি চার হাত পায়ে স্ত্রীর প্রবল বাক্যবানে বিদ্ধ হতে হতে খিলাপের সাহায্যে এক অন্ধ শক্তি ও প্রবল তাড়নায় সবাই পেরিয়ে গেলাম। উচ্ছ্বাস ও আনন্দে ভরা মনে প্রত্যেকের সতেজতা।
Destruction of the path,kafni
পথের  ধবংশাবসেস
খানিক বিশ্রাম নিয়ে  হাঁটা শুরু। খামখেয়ালী চড়াই বা উতরাই সেভাবে নেইপথের  দুপাশে থোকা থোকা ছোট ছোট লাল ফল,অনেক টা কুঁচ ফলের মত।খিলাপ কিছু ফল ছিঁড়ে আমাদের দিল,নিজেও মুখে পুরল। দাদা খা লিজিয়ে,এ গাঙুর,আচ্ছা লাগেগা কিন্তু কিন্তু করে সবাই মুখে পুরলাম।টক-টক,মিষ্টি-মিষ্টি এই ফল ছেঁড়া আর খাওয়ার নেশায় সবাই মেতে উঠলাম। পথে এক মেষ পালকের সঙ্গে দেখা,হাসি বিনিময়, খিলাপ আমাদের এগিয়ে যেতে বলে,তার সঙ্গে গল্পে মেতে উঠল।                     
panchayat guest house
খাতিয়ার জেলা-পঞ্চায়েত অতিথি-নিবাসে
আমরাও হাঁটতে হাঁটতে পৌঁছে গেলাম আজকের আস্তানা,খাতিয়ার জেলা-পঞ্চায়েত অতিথি-নিবাসে। যতদুর মনে পড়ছে চৌকিদারের নাম   
প্রদীপ। আমাদের দেখে হাসি মুখে এগিয়ে আসে,আপনারা কি  খিলাপের অতিথি?' খিলাপের পাকা ব্যবস্থাপনাদুয়ালী থেকে সকালে এক মেষপালককে দিয়ে আমরা যে এখানে আসছি,সে খবর পাঠিয়েছে। বোঁচকা বুঁচকি নামিয়ে,রেজিষ্টারে নাম লেখা ইত্যাদি করতে করতে খিলাপ ও চা এসে গেল। পশ্চিমে রঙের খেলা। খিলাপের প্রশ্ন- ভেড়ার মাংস কি আমরা খাব? সম্মতি পেয়ে চা খেয়ে সে বেরিয়ে পড়ল। দূরের পাহাড়ের পিছনে সূর্য নামতে ধীরে ধীরে পাহাড়ের ঢাল বেয়ে হিম-অন্ধকার নেমে আসে। পরিষ্কার আকাশে ঝাঁক ঝাঁক তারার জ্যোতি। শীতের তীব্রতায় ছুট লাগালাম উষ্ণতার জন্য রান্নাঘরে। প্রদীপের সঙ্গে গল্প-গুজবের মধ্যে খিলাপ এল একটা পচা গন্ধ নিয়ে। কিসের গন্ধ? খিলাপ সঙ্কোচের সঙ্গে জানাল-ভেড়ার মাংসের। ঝাঁঝাল পচা গন্ধে প্রান ওষ্ঠাগত। দূরে কোথাও মাংস স্থানান্তরিত হবার পর শুনলাম-এই ভেড়াটাকে বাঘে মেরেছে তিনদিন আগে। মাংস খাওয়া সঙ্গে সঙ্গে বাতিল হল ঠিকই কিন্তু মনের ভিতর গোপন বাঘের ভয় চেপে বসল। খিলাপের থেকে জানলাম তারা মাংসকে শুকিয়ে রেখে দেয়  শীতের খোরাকি হিসাবে।
    বাংলোতে কোন আলোর ব্যবস্থা নেই। কুমায়ুন মণ্ডলের বাংলোতে সোলার লন্ঠনের ব্যবস্থা ছিল। এখানে মোমবাতি ও নেই। অগত্যা টর্চ জ্বেলে বিছানা ঠিক হল। আলো নিভতেই ঘন কাজলের মত অন্ধকার। অজানা আতঙ্কে,নিশ্চিন্ত ঘুমের ইচ্ছাকে সবলে অসাড় করে দিয়েছে বাঘের ভয়। গুটিসুটি মেরে বিছানায় পড়ে থাকা আর ভোরের আলোর জন্য নিরন্তর ব্যকুলতা।
en route kafni glacier
  বাংলোর দরজা যখন খুললাম আলোয় ভাসছে খাতিয়া। ঝটপট প্রস্তুত হয়ে বেড়িয়ে পরা স্নাউট  পয়েন্টের উদ্দ্যেশে।কুয়াশার ঠান্ডা স্পর্শে গত রাতের ক্লেশ-ক্লান্তি ধুয়ে মুছে সাফ। চিরন্তন  নীরবতা,অন্থহীন অস্ফুটতাকে আলিঙ্গন করে বুগিয়ালের ওপর দিয়ে হাঁটা মাঝে বোল্ডারকীর্ণ এলাকা টপকে অবশেষে নদীর আঁতুড় ঘরে। এত কাছ থেকে গ্লেসিয়ার এর আগে দেখিনি। একদিকে শ্বেতশুভ্র তুষারের সাদা ঢেউয়ে ঢাকা নন্দাভানা আর এক দিকে নন্দাকোট। গহনে অবিরত ভাঙনের ঝনৎকার। মাথার ওপর পাখীর বুকের মত নরম সাদা শরতের ভেসে যাওয়া মেঘ। পায়ের নীচে তির তির করে বয়ে চলা কাফনী নালা। ঝাঁপিয়ে-পড়া,তলিয়ে-যাওয়া,গড়িয়ে-চলার কোন হাঁকডাক নেই কাফনীর বরং শিশুর মত হামা দিয়ে এগিয়ে যায় নির্দিষ্ট যৌবনের দিকে
kafni glacier
kafni river
তির তির করে বয়ে চলা কাফনী নালা
চলা ও বলা বন্ধ করে যা কিছু কুড়োবার কুড়িয়ে ফিরে চলা। খাটিয়াতে মধ্যাহ্ণ ভোজন সাঙ্গ করে বিরামহীন হাঁটা। দুয়ারে যখন সন্ধ্যা তখন আমরা ঢাকুরী।  
  রাতের আকাশের নীচে গোল করে বসে গল্প-গুজব। হিম-ধোয়া বাতাস এখন আর কাঁপন ধরায় না বরং বোধে জেগে ওঠে নির্মল, সুস্নিগ্ধ মায়ের পরশ। পাহাড় টপকে ওপারে কিছু পথ এগোলে বিপুল জনস্রোতের মধ্যে আবার ছুট,আবার আলো,ধুলো,জনকোলাহল,যন্ত্রের ঝনৎকার। ফুসরত নেই অলস ভাবে দম নেবার নিঃশব্দে ভেসে যাবার ইচ্ছা বন্দী থাকে লোহার খাঁচাতে। গত কয়েকদিন পিন্ডারী আর কাফনীর কোলে কোলে অপরিচয়ের বিপুল উদারতায় ভুলে ছিলাম সব। দুচোখ ভরা অবাক বিস্ময়,দুকান ভরা মূর্চ্ছনায় মনের দু-কুল ছিল ভরে। আজ এই নবমীর নিশি কোথা থেকে একরাশ বিষাদ ঢেলে দেয়
                            'হে প্রকৃতি এই নামহীন পথিকের প্রনাম গ্রহণ কর।'
pindari kafni route
     
                                                                 

১৯টি মন্তব্য:

  1. অসাধারন বর্ননা। চোখের সামনে চলে এল সবকিছু।

    উত্তরমুছুন
  2. Outstanding description and language, while reading it feels I am standing and looking by my own eyes,

    উত্তরমুছুন
  3. অসাধারন বর্ননা। চোখের সামনে চলে এল সবকিছু।

    উত্তরমুছুন
  4. ভাই তারক,
    লেখাটা পড়ে খুব আনন্দ পেলাম।
    প্রকৃতির বুক ছুঁয়ে পাহাড়িয়া এমন বর্ণনা উদাস করে তোলে।
    রসদ আরো আছে, সময়ের ঝুলিতে একটু এরকম পিছটান দিলেই চড়াই- উৎরাই শব্দের আরো মনমাতানো গন্ধ যে মিলবে তা আমি হলপ কোরে বলতে পারি।
    প্রবীর।

    উত্তরমুছুন
  5. দারুণ লিখেছ। এক নিঃশ্বাসে গিললাম বলা চলে।

    উত্তরমুছুন
  6. কি অসাধারণ লিখেছেন, তারকদা, অসাধারণ

    উত্তরমুছুন
  7. কি অসাধারণ লিখেছেন, তারকদা, অসাধারণ

    উত্তরমুছুন